জেলা প্রতিনিধি, নীলফামারী: বিয়ে একজনের। তবে বর সেজে কনে বাড়িতে হাজির হয়েছেন ২০ জন। শুনতে অবাক ও আশ্চর্য লাগলেও এমন ঘটনা ঘটেছে নীলফামারীর ডোমারে। বিয়েকে আনন্দ মুখর আর স্মরণীয় করতেই এ কাজটি করেছেন বরের বন্ধুরা।
সোমবার (২ অক্টোবর) উপজেলার জোড়াবাড়ি ইউনিয়নের হলহলিয়া পাড়া এলাকায় এমনটি ঘটে। তবে এ ঘটনায় কোনো বিব্রতকর পরিস্থিতির শিকার হতে হয়নি কাউকে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলার টেপ্রীগঞ্জ বটতলী নতুন পাড়া এলাকার বাসিন্দা মফিজ উদ্দীনের ছেলে হাসেম আলীর সঙ্গে ডোমার উপজেলার জোড়াবাড়ি ইউনিয়নের হলহলিয়া পাড়া এলাকার জয়নাল আলীর মেয়ে জেরিন আক্তারের বিয়ে ঠিক হয়। গতকাল সোমবার বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়। বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে বরের ২০ জন বন্ধু মোটরসাইকেলে করে শেরওয়ানি আর পাগড়ি পড়ে একসঙ্গে হাজির হয় কনে বাড়িতে। কে আসল বর, সেটি না বুঝেই গেট আটকে বিপাকে পড়েন কনে পক্ষ। এদিকে, ২০ বরের উপস্থিতি ঘিরে দিনভর উল্লাসিত হয় বিয়ে বাড়ি। এক বরযাত্রীতে এত বর দেখে অবাক হন কনে বাড়ির লোকজনসহ আগত অতিথিরা। ভিন্ন রকম অভিজ্ঞতায় বিয়ের আয়োজনে সামিলদের আনন্দের মাত্রা ছিল বহুগুণ।
বরের বন্ধু জুয়েল মিয়া বলেন, জীবনে তো আমরা অনেক বরযাত্রীতে গেছি। আজকে বন্ধুর বিয়েতে আমরা আরও ২০ জন বর সেজে এসেছি। আজকে আমাদের অনুভুতিটা অন্যরকম।
অপর বন্ধু সাজু ইসলাম বলেন, বিয়েতে মানুষ বিভিন্নভাবে আনন্দ করে। বিয়েতে আনন্দ দেওয়া ও নেওয়ার জন্য বন্ধুর বিয়েতে আমরা এসেছিলাম। বন্ধুর বিয়েটা স্মরণীয় রাখার জন্য ২০জন বর সেজে এসেছি।
দুলাল হোসেন নামে অপর একজন বলেন, বিয়ের অনুষ্ঠানে মানুষ বিভিন্নভাবে আনন্দ নিয়ে থাকে। আমরা একটু ব্যতিক্রমভাবে আনন্দ করার জন্য বর সেজে এসেছি। এতে বরযাত্রী ও কনেপক্ষের সবাই অনেক আনন্দিত। আমাদের বন্ধুর নতুন জীবন যেন সফল হয় সেজন্য সবার কাছে দোয়া কামনা করছি।
বরযাত্রী আবুল কাশেম বলেন, খুব আনন্দ হয়েছে। রাস্তায় অনেক লোকজন দেখে বিভিন্ন রকম মন্তব্য করেছেন। তাদের কথা আসলে বর কে নাকি একসঙ্গে এতোজনের বিয়ে হচ্ছে। আসলে আমাদের এলাকায় এরকম বিয়ে এটাই প্রথম। সবমিলিয়ে খুব ভালো লেগেছে।
কনের বাবা জয়নাল আলী বলেন, সবাই আমার জামাই ও মেয়ের জন্য দোয়া করবেন। জামাইয়ের বন্ধুদের ব্যতিক্রমী আয়োজনে সবাই খুবই আনন্দিত হয়েছেন।
জোড়াবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাখাওয়াত হোসেন বাবু বলেন, বর সাজে একসঙ্গে ২০ জনকে দেখে সবাই প্রথমে অবাক হয়ে যায়। পরে অবশ্য সবাই উপভোগ করেছেন বিষয়টি।